বাঘা মসজিদ রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ৪০ কি.মি. দক্ষিণ-পূর্বে বাঘাতে অবস্থিত। এটি বেশ ভালভাবে সংরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। ইটের দেওয়াল ঘেরা ৪৮.৭৭ মিটার বর্গাকার চত্বরের মধ্যে বেশ বড় আকারের একটি পুকুরের পশ্চিম পাড়ে মসজিদটি নির্মিত। মসজিদ চত্বরে প্রবেশের জন্য দুটি পুরানো খিলানকৃত প্রবেশপথ ছিল। এর একটি ছিল উত্তরদিকে এবং অন্যটি দক্ষিণ দিকে। দক্ষিণ দিকের প্রধান প্রবেশপথটি ছিল সাধারণ আয়তাকারের বক্রাকৃতির একটি কাঠামো। এর উভয় পার্শ্বে ছিল একটি করে মিনার। বাঘা মসজিদ, রাজশাহী ইটের তৈরি মসজিদটি বর্তমানে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধীনে একটি সংরক্ষিত ইমারত। এর কাঠামো আয়তাকার, যার বাইরের দিকের পরিমাপ প্রায় ২৩.১৬ মি. এবং ১২.৮০ মি.। মসজিদের বাইরের চারকোণার অষ্টাভুজাকৃতির বুরুজগুলি খুবই বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ছিল। এগুলি আলঙ্কারিক বন্ধনী দ্বারা বিভিন্ন অংশে বিভক্ত ছিল এবং এগুলির উপরে ছিল বহুভুজ নিরেট ছোট গম্বুজ। মসজিদের কার্নিস নমনীয়ভাবে বাংলারীতিতে বক্রাকারে তৈরি করা হয়েছিল। পূর্ব দিকে পাঁচটি এবং উত্তর ও দক্ষিণে দুটি করে খিলানপথ আছে। অভ্যন্তরভাগে দক্ষিণের তিনটি ‘বে’-র পশ্চিম প্রান্তে তিনটি মিহরাব, চতুর্থ ‘বে’-তে একটি খোপ (প্যানেল) নকশা এবং উত্তর-পশ্চিম কোণের একটু উঁচু গ্যালারিতে একটি ছোট মিহরাব আছে। মসজিদের অভ্যন্তরভাগকে চারটি প্রস্তরস্তম্ভের একটি সারি দ্বারা দুটি লম্বালম্বি আইল ও পাঁচটি ‘বে’-তে বিভক্ত করা হয়েছে। এর ফলে মসজিদের অভ্যন্তরভাগ দশটি স্বতন্ত্র অংশে বিভক্ত হয়েছে। এর প্রত্যেক ভাগ উল্টানো পেয়ালা আকৃতির গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত ছিল। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে আদি ছাদ ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ বর্তমানের গম্বুজটি পুনঃনির্মাণ করে। পাথরের স্তম্ভ এবং দেওয়াল সংলগ্ন পাথরের পোস্তাগুলি (pilaster) থেকে উত্থিত আড়াআড়িভাবে ছেদকৃত খিলানগুলি গম্বুজের ভার বহন করছিল। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, প্রবেশপথের খিলানের উৎপত্তিস্থলে স্থাপিত সরদল আকারে পাথরখন্ডগুলি মসজিদের চতুর্দিকে বসানো আছে। এর ফলে বাইরে থেকে মসজিদকে দ্বিতল বলে মনে হয়।
No comments:
Write $type={blogger}